আম্মাজান আয়েশা (রা) এর বিয়ে কি আসলেই ৬ বছর বয়সে হয়েছে?

লিখেছেন - আশরাফুল নাফিজ বিয়ের সময় হযরত আয়েশার বয়স! মহানবী ﷺ এর সঙ্গে আয়েশা (রা)-এর বিয়ের সময় তাঁর বয়স কত ছিল? আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এঁর সাথে ৯ বছর বয়সে প্রিয়নবীর ﷺ বাসর, এ সংক্রান্ত হাদিসের কিতাবে আসা বিভ্রান্তিকর তথ্য। হাইসাম (বা হিসাম) বিন উরওয়াহ কর্তক বর্নিত হাদিস থেকে হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর সঙ্গে আয়েশা (রা)-এর বিবাহ এবং এর সিদ্ধি মূলত সার্থক হয়েছিল যখন আয়েশার বয়স ছিল ৬-১৮ বছর। আহলুস-সুন্নাহ্ বা সুন্নিদের হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী প্রচলিত তথ্যমতে, হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর সাথে আয়েশার বিয়ের সময় তার বয়স ছিল ৬/৭ বছর। সহিহ বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদে এসেছে যে, নিশ্চয়ই হুজুর নবী করিম ﷺ আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা রা. এঁর সাথে বিয়ে করেন যখন আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর বয়স ছিল ৬ ও বাসর করেন যখন তাঁর বয়স ৯৷ সহীহ বুখারী, মুসলিম সহ অনেক হাদীস গ্রন্থে হযরত আয়েশা (রা) এর বয়স নিয়ে এ রেফারেন্স এসেছে তা হাইসাম (বা হিসাম) বিন উরওয়াহ কর্তক বর্নিত একটি হাদিসেরই উৎস এবং এটা সম্বন্ধে সংশয় প্রকাশ করবার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সর্বপ্রথম আমাদের যে বিষয়টি বুঝতে হবে তা হচ্ছে, রাসুল ﷺ এর সময় আরব সমাজের অধিকাংশই ছিল নিরক্ষর এবং খুব কম লোকই লিখতে বা পড়তে পারত। বড় বড় ঘটনাগুলোর সন তারিখ হিসেব রাখার জন্য যেখানে কোন নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হত না, সেখানে মানুষের জন্ম মৃত্যুর তারিখ হিসেব রাখার কথাতো বাদই দেয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর জন্মের সন ও তারিখ, মহানবীর সাথে খাদিজার বিয়ের সময় তাদের উভয়ের বয়স সম্পর্কে ৩/৪ ধরনের বর্ণনা পাওয়া যায়। এগুলোতে যে সনের বর্ণনা পাওয়া যায় সেগুলা কোনটাই শতভাগ সহিহ বর্ণনা নয়। সুতরাং রাসূল ﷺ এর সময় আরবে মানুষের বয়স সংক্রান্ত বর্ণনাগুলো বিভ্রান্তিকর এবং অনির্দিষ্ট ছিল এটা একদম সহজেই বলা যায়। কুরআন, সহিহ হাদিস, আকল, যুক্তি, প্রচলন, সামাজিক রীতি, নবী করিম ﷺ এর নবুওয়াতের ঘোষণার পরের সকল ঘটনার ঐতিহাসিক ক্রমধারার সকল কিছুর বিপরীতে এই ৬ বছরে বিয়ে ও ৯ বছরে সহবাসের হাদিস। নবী ﷺ খারাপ রীতি গ্রহন করতে আসেন নি বরং খারাপ রীতি বিলুপ্ত করতে এসেছিলেন। তাই কেউ যদি ৬ বছরের মেয়েকে বিয়ে করার বিষয়কে সে যুগের রীতি ছিল বলে চালানোর চেষ্টা করে তাহলে তা নিতান্তই মহানবীর আদর্শের বিরোদ্ধীতা, অপবাদ, মহানবীর শানে বেয়াদপি ও তার অপমান ছাড়া কিছুই না। এছাড়া ইসলামে বালিগ বা বালাগাত হওয়া ছাড়া কোন মেয়ের সাথে বিবাহ করে সহবাস করা সমর্থন যোগ্য না, যারা মনে করে কম বয়সে বালেগ হওয়ার পর বিবাহ করাও অপরাধ তারা এটা পড়ে দেখবেন দয়া করে। মহানবী ﷺ নিজের কোন মেয়েকে ১৫/১৬ বছরের আগে বিয়ে দেন নি এবং আবু বকর (রা) এর বড় মেয়েরও বয়সন্ধিকাল পার হওয়ার অনেক পড়ে বিবাহ হয়েছেল। এছাড়া আয়শা (রা) বিয়ের সময় যে প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন এটা প্রমান পাওয়া যায় হাদিস থেকে। হাদিসে উল্লেখ আছে আয়শা (রা) বলেছেন, “যখন একটি মেয়ে ৯ বছর বয়সে পৌছায়, তখন সে মহিলা (প্রাপ্তবয়স্কা) হয়ে যায় ”[কিতাবুত তাহারাহ ওয়াস সালাহ বর্ণনা/৩০৫৬; তিরমিজি ১১০৯] হাদিসটি সহিহ। এই হাদিস থেকে এটা বুঝাই যাচ্ছে তখনকার সময়ে মেয়েরা তারাতারি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যেতেন। এই হাদিসগুলো নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে কিন্তু তারপরও যদি ধরে নি যে হাদিসগুলো সঠিক তারপরও এটা প্রমান কেউ করতে পারবে না যে মুহাম্মদ ﷺ আয়শা (রা) এর সাথে ৯ বছর বয়সে সহবাস করেছিলেন। বিস্তারিত প্র্রমান - আয়শা (রা) কি ৯ বছর বয়সে মহানবী ﷺ এর সাথে সহবাস করেছিলেন? ৬ বছরে মা আয়শার বিবাহের বিরোধী কিছু হাদিস বুখারির হাদিস ও সিরাতের আলোকে হিসাম বিন ওরওরা থেকে প্রাপ্ত হাদিসের খন্ডন করা হল। (এখানে অল্প কিছু তত্ত্ব উল্লেখ করলাম শুধু, এগুলা ছাড়া আরো অনেক আছে) আগে একটা কথা বলে রাখা ভাল তা হল মহানবী ﷺ এর সাথে আয়শা (রা) এর বিবাহ আনুমানিক ৬২৩/২৪ খ্রিষ্টাব্দে হিজরতের পর হয়েছিল। ১। (এই দলিলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ) আয়েশা সিদ্দিকা (রা) বলেছেন যেদিন হতে আমার জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে সেদিন হতেই আমি আমার আব্বা আম্মাকে দ্বীনের আনুসারী হিসাবেই পেয়েছি। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহ) বলেন, আবূ সালিহ্‌ (রহ) ............. ‘আয়িশা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যেদিন হতে আমার জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে সেদিন হতেই আমি আমার আব্বা আম্মাকে দ্বীন ইসলামের অনুসারীরূপে পেয়েছি এবং আমাদের এমন কোন দিন যায়নি, যে দিনের দু’ প্রান্তে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর রসূল ﷺ আমাদের নিকট আসেননি। যখন মুসলিমগণ কঠিন বিপদের সম্মুখীন হলেন তখন আবূ বকর (রা) হাবশা (আবিসিনিয়া) অভিমুখে হিজরতের উদ্দেশে যাত্রা করলেন।... [সহিহ বুখারী, হাদিস ২২৯৭] এটা সুস্পষ্টভাবে বলে আয়শা (রা) সেসব সাক্ষাতের সময় বুঝদার ছিলেন। আর নিশ্চিতভাবে হাবশায় হিজরত সকল ইতিহাস ও সিরাতের কিতাবের ঐক্যমত্য নবুয়াতের ঘোষনার ৫ম সনে সংঘটিত হয়। [ফাতহুল বাড়ি ১/৫০১] এখন যদি বুখারীতে বর্ণিত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর বয়সের বর্ণনা মেনে নিই (নবুয়াতের ঘোষণাত ৪র্থ বছরে জন্ম) তবে হাবশায় হিজরত এর সময় আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর বয়স হয় ১ বছর, তিনি তখন দুধের শিশু। এই কথা কিভাবে উক্ত হাদিসে আসা "যেদিন হতে আমার জ্ঞান বুদ্ধি হয়েছে সেদিন হতেই আমি আমার আব্বা আম্মাকে দ্বীন ইসলামের অনুসারীরূপে পেয়েছি" এই কথার সাথে কিভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়? বরং সময়ের ক্রময়ানুসারের সঠিক হিসেবে হাবশায় হিজরতের সময় আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর বয়স ছিল ৪+৫=৯ এটাই সঠিক। নবুয়াতের ঘোষনার ৪ বছর আগে জন্ম এবং ৫ বছর পর হাবশায় হিজরত। এজন্যই তিনি সেই সময়ের সকল ঘটনা মনে রেখেছেন। ২। (এটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল) বুখারি শরীফেই এসেছে, ‘আয়িশাহ (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, “বরং কিয়ামত তাদের প্রতিশ্রুত সময়। আর কিয়ামত অতি ভয়ঙ্কর ও তিক্ততর” (সূরা কামার আয়াত ৪৬) আয়াতটি মুহাম্মদ ﷺ-এর প্রতি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। আমি তখন কিশোরী ছিলাম, খেলাধূলা করতাম। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৪৮৭৬]। আর এই সূরা মদিনা হিজরতের ৫ বছর আগে অর্থাৎ ৬১৬/১৭ খ্রিষ্টাব্দে অবতীর্ণ হয়েছে, আবার অনেকে বলেছে সূরা আল-কামার নবুওয়াতের পর পঞ্চম বছরে, অর্থাৎ ৬১৪/৬১৫ খ্রিস্টাব্দে অবতীর্ণ হয়েছিল [সূরা ক্বামার‌, তাফসিরে কুরতুবী, আয়াত ২৬, তাফসির ইবনে কাসির, আয়াত ১-২, আল-তাহরীর ওয়াল-তানভীর, (প্রকাশনা - মুয়াসাস আল-তারীখ, লেবানন) ২৭/১৬১, দ্য বাউন্টিয়াস কোরান by ম.ম. খতিব (১৯৮৫)] এই হাদিসে 'মেয়ে' (জারিয়াহ) শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে, (উদাহরণস্বরূপ 'শিশু' (সাবি) এর পরিবর্তে) শাস্ত্রীয় আরবীতে 'জারিয়াহ' অর্থ বয়ঃসন্ধিকাল বা তার বেশি বয়সের যুবতী। এই অনুসারে, বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার ৬/৭ বছর আগে আয়েশা (রা) ইতিমধ্যেই কিশোরী হয়ে উঠেছিলেন। রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস (রা) নিজেও বলেছেন, ‏ অর্থাৎ বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হওয়া আর এই সূরাটি নাযিল হওয়া উভয়ের মধ্যখানে সাত (৭) বছরের তফাৎ রয়েছে। আর এই ক্ষেত্রে আয়াতটি মক্কায় নাযিল হয়। এবং বুখারীতে এসেছে যে, আয়েশা (রা) হতে বর্ণিত আছে….। যাইহোক, সে হিসাবে হযরত আয়েশার বয়স তখন ৮ বছর হলেও ৬২৩-৬২৪ খৃষ্টাব্দে তাঁর বয়স কোনো ভাবেই ১৫-১৬ বছরের নিচে নয়। কাজেই বিয়ের সময় ৬ ও ৯ বছরের সেই বর্ণনা মেনে নিলে, সূরাতুল কমর অবতীর্ণ হওয়ার সময় আয়েশা সিদ্দিকা (রা) দুধের শিশু হওয়ার কথা অথবা তাঁর ২.৫-৩ বছর হওয়ার কথা৷ অথচ তিনি বলছেন তখন তিনি কিশোরী ও খেলাধুলা করেন। কাজেই বিবেক বলে তখন তাঁর বয়স কমপক্ষে ৭-৮ বছর ছিল। ৩। ইমাম বুখারির সরাসরি ওস্তাদ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রাহ) তাঁর বিখ্যাত হাদিসের কিতাব মুসনাদে এবং তাবাকাত ইবনে সাদ এ বর্ণিত আছে, আয়েশা সিদ্দিকা (রা) বলেন, যখন খাদিজাতুল কুবরা রা ইন্তেকাল করলেন, খাওলা বিনতে হাকিম (রা) এলেন এবং বললেন, আপনার সন্তানদেরকে দেখা শোনা করা ও ঘর সামলানোত আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে, ইয়া রাসুলাল্লাহ ﷺ আপনি কি বিয়ে করবেন না? নবি করিম ﷺ জিজ্ঞেস করলেন (পাত্রী) কে? তিনি বললেন, যদি কুমারী চান তবে কুমারী, আর বিধবা চাইলে বিধবা। নবি করিম ﷺ জিজ্ঞেস করলেন, কুমারী কে? তিনি বললেন, আপনার কাছে আল্লাহর সবচাইতে প্রিয় সৃষ্টি আবু বকর সিদ্দিক (রা) এর কন্যা আয়েশা। এখানে স্পষ্ট হয় যে খাওলা বিনতে হাকিম রা বিধবা ও কুমারী উভয়ের কথাই পেশ করেছেন নবি করিমের ﷺ কাছে। [মুসনাদে আহমদ ৬/২১০] তাহলে তিনি যখন পেশ করেছেন প্রস্তাব তখন এমন কারো কথা পেশ করেছেন যারা বিয়ের জন্য উপযুক্ত ও ঘর সামলানোর জন্যও উপযুক্ত। হাদিসের বাচনভঙ্গি বলছে নিশ্চিতরুপে তিনি তাদের প্রস্তাব রেখেছেন যারা উপস্থিত মূহুর্তে বিয়ে করতে পারবেন। কারণ তিনি তখনই বলেছেন, "যদি চান কুমারী যদি চান বিধবা।" আকল সম্মতি দেয় না যে, খাওলা বিনতে হাকিম রা ৬ বছর বয়সের কোন শিশুর নাম প্রস্তাব করে বলবেন কুমারী। এছাড়া আয়শা (রা) থেকে মহানবী ﷺ এর সন্তানদের থেকে ছোট সেহেতু তখন ৬ বছরের মেয়ের পক্ষে তার বড় কাউকে দেখাশোনা করা ও ঘর সামলানোত অসম্ভব তাহলে খাওলা (রা) কেন এমন মেয়ের নাম নিবেন তখন? ৪। ইমাম বুখারির সরাসরি ওস্তাদ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রাহ) তাঁর বিখ্যাত হাদিসের কিতাব মুসনাদেই আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর বিয়ের প্রস্তাব সংক্রান্ত দীর্ঘ ঘটনায় আরো বলেন যখন খাওলা বিনতে হাকিম (রা) এই প্রস্তাব দেন তখন উম্মে রুম্মান (রা) বলেন , "নিশ্চয়ই মুতইম ইবনে আদি তাঁর ছেলের জন্য প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে (আয়েশার জন্য ৬১৫ সালে)। আর আল্লাহর কসম আবু বকর সিদ্দিক (রা) কখনোই তার ওয়াদার খেলাফ করবেন না৷ .... হয়ত তুমি আমার ছেলেকে মুসলিম বানানোর চেষ্টা করবে!" এর সহজ সরল অর্থ হচ্ছে মুতইম ইবনে আদি তার ছেলে জুবায়ের ইবনে মুতইম এর জন্য আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল। আর সে ছিল কাফির৷ আর আবু বকর সিদ্দিক (রা) কখনোই ওয়াদা ভাংতেন না। তখন আবু বকর সিদ্দিক রা মুতইম ইবনে আদির কাছে গেলে সে বলল, আমি যদি তোমার মেয়েকে আমার ছেলের জন্য আনি তবে হতে পারে তুমি আমার ছেলেকে মুসলমান করে ফেলবে।" [মুসনাদে আহমদ ৬/২১১] এখান থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা রেজাল্ট বের হয়, আয়েশা সিদ্দিকা (রা) এর কিভাবে ৬ বছর বয়সের আগেই একজন পরিপূর্ণ বয়সের মানুষের সাথে বিয়ে শাদী ঠিক হয়ে থাকতে পারে? কারণ জুবায়ের ইবনে মুতইম বদর ও উহুদে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। যেভাবে এটাও অসম্ভব মনে হয় যে, আবু বকর সিদ্দিক রা তার কন্যার একজন মুশরিকের সাথে বিবাহ দিতে যাবেন তার বাবার কাছে, যে ব্যক্তি মক্কাতে মুসলমানদেরকে কষ্ট দিচ্ছিল৷ এটা এই প্রমাণ করে যে, নিশ্চয়ই এটা বিবাহের প্রস্তাব ছিল যা নবুয়াতের ঘোষনার আগে ঠিক হয়েছিল যখন তারা দুজন খুবই ছোট ছিলেন। এটা এই প্রমাণ করে যে আয়েশা সিদ্দিকা (রা) নবুয়াতের ঘোষনার আগে জন্মগ্রহণ করেন। ৫। মুহাম্মদ ﷺ থেকে সে সম্পর্কে যে বর্ণনা তিনি জেনে ছিলেন সেই কথা আয়েশা (রা) নিজেই বর্ণনা করে গিয়েছেন-তিনি বলেছেন-“তোমাকে বিয়ে করার আগে আমাকে ২ বার স্বপ্ন দেখান হয়েছিল। আমি দেখেছি একজন ফেরেশতা তোমাকে এক টুকরো রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে আসছেন। আমি বললাম- আপনি নিকাব উন্মোচন করুন! যখন তিনি নিকাব উন্মোচন করলেন তখন আমি দেখতে পেলাম যে ঐ মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম –এইটি যদি আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা অবশ্য বাস্তবায়ন করবেন। তারপর আবার আমাকে দেখানো হলো যে, একজন ফেরেশতা তোমাকে এক টুকরো রেশমি কাপড়ে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে আসছেন। আমি বললাম- আপনি নিকাব উন্মোচন করুন! যখন তিনি নিকাব উন্মোচন করলেন তখন আমি দেখতে পেলাম যে ঐ মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম – এইটি যদি আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা অবশ্য বাস্তবায়ন করবেন। [সহীহ বুখারি হাদিস ৫০৭৮] আপনারাই চিন্তা করুন ৬ বছরের মেয়েকে কি আমাদের নবী মহিলা হিসেবে স্বপ্নে দেখেছিলেন? ৬ বছরের বাচ্ছা মেয়ে কিভাবে এসব বিষয়ে বুঝতে পারে? ৬ বছরের বাচ্ছা মেয়ে কিভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের মত উত্তর দিতে পারে? ৬ বছরের বাচ্ছা মেয়েকে আমাদের নবী কেন একথা বলবেন (কারন কিছু হাদিস মতে আয়েশা তখন অনেক ছোট) তার মা-বাবাকে না বলে?এত ছোট মেয়ে এত জ্ঞানী উত্তর দেওয়া আদো সম্ভব? ৬। সহীহ বুখারী ও মুসলিমের হাদিস অনুযায়ী, বিবি আয়েশা সম্পর্কে বলা হয় যে তিনি উহুদের যুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করেন [বুখারি, হাদিস ২৮৮০, ২৯০২, ৩৮১১, ৪০৬৪]। ৬ বছরে বিয়ের হাদিস অনুযায়ী তখন আনুমানিক তার বয়স হওয়ার কথা ১০/১১ [ফাতহুল বারি ১/৬৫১]। অথচ মহানবী ﷺ যেহেতু ১৫ বছরের নীচে কাউকে যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রণের অনুমতি দিতেন না [বুখারী ২৬৬৪, মুসলিম ১৮৬৮; আবু দাউদ ৪৪০৬] তাই বলা যায় উহুদের যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল কমপক্ষে ১৫ বছর। উহুদের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬২৫ অব্দে। সুতরাং সেই অনুযায়ী ৬২২ অব্দে তাঁর বিবাহের বছরে তাঁর বয়স হওয়া উচিৎ অন্তত ১৩ বছর।

Comments