knowledge of Islam-রবিবার, এপ্রিল ২৪, ২০২২
এই লিখাটির মূল লেখক সানা উল্লাহ মুহাম্মাদ কাউসার।
দুনিয়াবী সকল কাজ থেকে মুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ আল্লাহর ইবাদতের জন্য মসজিদে অবস্থান করাকে ই‘তিকাফ বলা হয়ে থাকে। দুনিয়াদারীর ঝামেলা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হওয়া, বিনয় নম্রতায় নিজেকে আল্লাহর দরবারে সমপর্ণ করা এবং বিশেষ করে লাইলাতুল কদরে ইবাদত করার সুযোগ লাভ করাই ই‘তিকাফের উদ্দেশ্য।
ইতিকাফ কি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়্যাহ নাকি শুধু সুন্নতে মুয়াক্কাদা এই ব্যাপারে দুটি মত পাওয়া যায়। যেমন, এক পক্ষের মতামত হলো—
“রমাদানের শেষ দশ দিনের ই'তিকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়াহ, যেটা মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে কেউ আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে আর কেউ আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবেন।” [ফাতহুল কাদীর ২য় খন্ড/পৃষ্ঠা ৩০৪; রদ্দুল মুহতার, ২/৪৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭; ইলাউস সুনান ১৬/১৭২; রদ্দুল মুহতার ৬/৫৫; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৭/১৬৯]
এরপর উপরোক্ত ব্যাপারে আরেকটি মত পাওয়া যায় তা হলো। এটি সুন্নাত। তবে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সুন্নাহ, যা করতে রাসুল সাঃ বিশেষভাবে তাগিদ প্রদান করেছেন। সবার পক্ষ থেকে কেউ আদায় না করলে মহল্লার সবাই গুনাহগার হবেন এই মতটিকে তারা বাতিল করে দিয়েছেন। [সুরা আনআম, আয়াত ১৬৪; আল-মাজমুয়ু লি ইবনে তাইমিয়া, ৬/৪০৪; আল-মুগনি, ৪/৪৫৬; শারহুল উমদা, ২/৭১১; মাজমুউল ফাতাওয়া (ইবনে বায) ১৫/৪৩৭; ইবনুল মুনযির/ আল-ইজমা, পৃ. ৫৩; ফিকহুল ইতিকাফ, পৃষ্ঠা - ৩১]
একটু চিন্তা করে দেখুন, ইতিকাফ কেউ আদায় না করলে মহল্লাবাসীর সবাই গুনাহগার হবেন। তার মানে অসুস্থ, বৃদ্ধ, মহিলাসহ সবাই! অথচ হেদায়া-১/২৩০ এবং ফতোয়া আলমগীরি-১/২১১-তে মহিলাদের ইতিকাফ মসজিদে জায়েজ নেই ফতোয়া রয়েছে ফিতনার অজুহাতে।
মহিলারা যদি মসজিদে যাওয়াটাই নিষিদ্ধ হয়ে থাকে তাহলে ইতিকাফ না করার ফলে মহল্লাবাসীর সবাই কেন গুনাহগার হবেন। (ফতোয়াতে “মহিলা বাদে“ পুরুষরা গুনাহগার হবে এমন কোন কথা তো নেই)। তাছাড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিয়ায়্যাহ কি তাহলে শুধু পুরুষদের জন্য: মহিলাদের জন্য নয়..! যদি শুধু পুরুষদের জন্য হয়ে থাকে তাহলে মহিলাদেরও ইতিকাফের বিধান কেন থাকলো!
নিম্মোক্ত কিতাবগুলিতে ইতিকাফ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা থাকলেও মহল্লাবাসীর সবাই গুনাহগার হবেন মর্মে কোন আলোচনা ছিলনা, এমনকি ইতিকাফকে শুধু সুন্নাত হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। মান্নতের ইতিকাফকে ওয়াজিব বলা হয়েছে। [আহসানুল ফাতওয়া, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা ৪৯৮; বাহরুর রায়েখ, ২/৪২১; বাদায়েউস সানায়ে, ২/১০৯]
শাইখ বিন বায (রহ) ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’ গ্রন্থে (১৫/৪৩৭) ইতিকাফ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটার দীর্ঘ আলোচনা করতে যেয়ে সুন্নাত হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন এবং সেখানেও তিনি মহল্লাবাসীর সবার গুনাহগার হওয়ার বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়া ড. খালেদ আল-মুশাইকিহ বলেন– “আলেমগণ ইজমা করেছেন যে, ইতিকাফ সুন্নত; ফরয নয়। তবে কেউ যদি মানত করে নিজের উপর ফরয করে নেয় তাহলে ফরয হয়।” [ফিকহুল ইতিকাফ, পৃষ্ঠা নং- ৩১]
উপরোক্ত আলোচনা ও দলিলের মাধ্যমে সচেতন যে কেউ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বিবেক খাটিয়ে। অন্ধ অনুকরণ বা কোন পক্ষের তাবেদারি নয়: ইসলাম অন্ধ অনুকরণ সমর্থন করেন না। (তবে, মহল্লার সবাই গুনাহগার হবেন ব্যাপারটিকে আমার কাছে ততটা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মনে হয়না এই কারণে যে, মহল্লায় নারীরা রয়েছে, অসুস্থ থাকতে পারে, বৃদ্ধারা থাকতে পারেন তারা সবাই কেন অন্যরা পালন করেনি বলে গুনাহগার হবেন)। (আল্লাহু আ'লাম)!
❐ ইতিকাফ সম্পর্কিত কিছু বিশেষ তথ্য
ইসলামী শরীয়তে ই‘তিকাফ ৩ প্রকার। ওয়াজিব ই‘তিকাফ : ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে ওয়াজিব ই‘তিকাফ হলো মানতের ই‘তিকাফ [সূরা হজ আয়াত ২৯, বুখারি ২০৪৩]। সুন্নাত ই‘তিকাফ : রমযানের শেষ ১০ দিনের ই‘তিকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। মুস্তাহাব ই‘তিকাফ : উল্লেখিত দু’প্রকার ব্যতীত বাকী সব মুস্তাহাব ইতেকাফ। [আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৪৯৮; বাহরুর রায়েক ২/৪২১; বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৯]
১. ইতিকাফ এতটাই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফজিলতের ইবাদাত রাসুল (সা) এর জীবদ্দশায় কোন বছর রমাদানের শেষ দশদিন ইতিকাফ বাদ দেন নি। ইন্তেকালের বছর বিশদিন করেছেন। [সহিহ বুখারী, হাদিস ২০২০, ২০২৬,২০৪৪; মুসলিম ১১৭২; তিরমিজি, হাদিস ৭৯০]
২. ইতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে যতগুলা হাদিস আছে সবগুলা যয়িফ অথবা জাল অথবা মুনকার। সহিহ হাদিস দ্বারা ইতেকাফ এর কোন ফজিলত সম্পর্কে যানা যায় না। [যয়িফু ইবনে মাজাহ; আলবানী দাঈফ আল-জামি' ৫৪৪২; আল-সিলসিলাহ আল-দাইফাহ ৫১৮, ৫৩৪৫; মাসায়েলু আবি দাউদ, পৃষ্ঠা-৯৬]
৩. ইতেকাফকারী যদি বেহুঁশ বা পাগল হয়ে যায়, জিন-ভূতের আছরের কারণে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে এবং এ অবস্থা যদি একদিন একরাত বিদ্যমান থাকে তবে ধারাবাহিকতা খতম হয়ে যাওয়ার কারণে ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। যদি একদিন একরাত পূর্ণ হওয়ার আগেই হুঁশ বা বুদ্ধি ফিরে আসে, তবে ইতেকাফ নষ্ট হবে না। [রদ্দুল মুহতার: ২/৪৫০]
৪. ইতেকাফকারী কোনো শিরক বা কুফরি কাজ করলে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে। অনুরূপ নারীদের হায়েজ-নেফাস শুরু হয়ে গেলে এবং স্ত্রী সহবাস বা যে কোনো প্রকার যৌন সম্ভোগ করলে ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে। [রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৭; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৭/২৮৬; জামিউর রুমুয ১/৩৮৫]
৫. মহানবী (সা) বেশির ভাগ রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। [বুখারি ২০২৫; মুসলিম ১১৭২; আহমাদ ২৪৫৯৮], তিনি কয়েকবার রমজানে ৩০দিনও ইতিকাফ করেছেন [সহীহ মুসলিম হাদিস ২৬৪২ ইসলামিক ফাউন্ডেশন], বেশ কয়েকবার তিনি রমজানে ২০দিনও ইতিকাফ করেছেন [সহিহ বুখারী, ২০৪৪; মিশকাত-২১০২; সহীহ তিরমিযী ৮০৩]
অধিকাংশ স্কলারদের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় এক মুহূর্তের জন্যও হতে পারে। এটি ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাব। [আলমাজমু ৬ষ্ট খন্ড/পৃষ্ঠা ৪৮৯]
কারো যদি কোন বিশেষ কারনে ইতিকাফ ভেঙ্গে যায় তাহলে সে পারবর্তিতে যে কোন সময় তা কাযা ইতিকাফ করতে পারবে। মানত যদি ১ দিনেরও হয় তাহলেও তা পূরন করবে [সহিহ বুখারী হাদিস ২০৩২, ২০৩৩; সহিহ মুসলিম ১৪/২, আহমাদ ২৪৫৯৮, রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৪-৪৪৫; আহকামে ইতিকাফ ৫০]
❐ নিষিদ্ধ কাজগুলি হলো -
৬. মসজিদের বারান্দায় যেতে পারবেন না। এমনকি বারান্দা ঝাড়ু দেওয়া বা ইফতার করার নিমিত্তেও না! (বারান্দা মসজিদ নয়!) [ফাতওয়ায়ে লাজেনায়ে আলাদ দায়েমা, ফতোয়া নং ৬৭১৮; দুররুল মুখতার, ২য় খন্ড/পৃষ্ঠা ৪৫০]
উপরোক্ত ফতোয়ার রচয়িতাবৃন্দ সহিহ বুখারীর ২০২৯, ১৯২৫ ও ১৯০২ নং হাদিসের আলোকে এই মর্মে রায় দিয়েছেন যে, মসজিদে নববীতে বারান্দা থাকা সত্বেও রাসুল (সা) বারান্দায় আসতেন না, বরং মূল মসজিদের ভেতর থেকেই হযরত আয়েশা রাঃ এর দিকে মাথা রাখতেন।
কিন্তু অনেকে মনে করেন, মসজিদ নির্মানের সময় যদি বারান্দাকে মূল মসজিদের অন্তর্ভুক্ত করে নির্মান করা হয় তাহলে বারান্দায় যাওয়াতে ই'তিকাফ ভঙ্গ হবেনা। [ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ১/২১২]
তবে আমরা প্রথম মতটিকে বেশি প্রাধান্য দিতে পারি যেহেতু ফতোয়ায়ে আলমগিরীর মতের চেয়েও প্রথম মত (অর্থাৎ বারান্দায় যাওয়া যাবেনা) এটার পক্ষে শক্তিশালী দলিল রয়েছে।
৭. ফরজ সালাতের অজু ছাড়া অন্য কারণে অজুখানায় গেলে ই'তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে। [তাহতাবি আলাল মারাখিল, কিতাবুস সাওম, বাবুল ই'তিকাফ, পৃষ্ঠা ৫৭৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক, ১/৩৫০]
৮. প্রাকৃতিক প্রয়োজন, ফরজ অজু ও ফরজ গোসল ছাড়া মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবেনা। ই'তিকাফ ভেঙ্গে যাবে। [সহিহ বুখারী, হাদিস ২০২৯; আবু দাউদ, হাদিস ২৪৬৫; ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ১/২১৩]
✗ উপরোল্লিখিত প্রয়োজন ব্যতীত বের হলে ই'তিকাফ ভেঙ্গে যাবে। [আল মুগনী, ৩য় খন্ড/পৃষ্ঠা ৭০; ফাতহুল বারি, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা ২৭৩]
তবে স্ত্রী যদি সাক্ষাৎ করতে আসেন তার সাথে সাক্ষাৎ শেষে কিছুদূর এগিয়ে দিতে পারবেন মসজিদ থেকে বের হয়ে। [বুখারী, হাদিস ২০১৫; মুসলিম, হাদিস ২১৭৫]
৯. রোগি দেখতে বা জানাজার নামাজের জন্য বের হওয়া যাবেনা। [শরহু ইবনে বাত্তাল আলাল বুখারী, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা ১৬৬; মিশকাত, হাদিস ২১০৬; দারাকুৎনী, ২/২০১; ফাতাওয়া শামি ২/২১৩]
✗ তবে চলন্ত অবস্থায় রোগির কথা জিজ্ঞেস করা যাবে। [শরহু ইবনু মুলাক্কিন আলাল উমদাহ, ৫/৪৩৯]
১০. ইতেকাফ অবস্থায় দিন-রাতে কোনো সময়ই স্বামী-স্ত্রী মেলামেশা করা যাবে না। করলে এতেকাফ ভেঙ্গে যাবে। [সূরা বাকারা আয়াত ১৮৭, বাদায়ে ২/২৮৫, শামী ৩/৪৪২, হেদায়া ১/২৩১]
১১. বাবা মা অথবা নিকটাত্মীয় কারো মৃত্যুতে বের হয়ে গেলে ই'তিকাফ ভেঙ্গে যাবে। ফলে আবার নতুন করে ই'তিকাফ করতে হবে। [শরহু ইবনু বাত্তাল আলাল বুখারী, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা ১৬৬]
১২. বিনিময় প্রদানের মাধ্যমে ইতিকাফ করা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম সাব্যস্ত করা হয়েছে। [জামে তিরমিজি ১/৫১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/১১৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৪; মাবসূত, সারাখসী ১৬/৩৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১১৪; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৫/৩৭; ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৭৬; আল ফিক্বহ আলা মাযাহিবিল আরবাআ-৩/৯৬; ফাতাওয়ান নাওয়াযিল,পৃ. ৩৭৬-৩৭৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া-৩/১৪৪; মাজমাউল আনহুর-৩/৪১৮; আল জাওহারাতুন নায়্যিরাহ-১/৫৯১; ফাতহুল কাদীর-৯/পৃ. ৯৮-৯৯; ফাতওয়ায়ে মাহমুদীয়া-১৫/৩৩৬]
১৩. সম্পূর্ণ নীরব থাকা এবং কারোর সঙ্গে আদৌ কথা না বলা, মসজিদে পণ্য সামগ্রীর ক্রয়-বিক্রয়, প্রাণীর ছবিযুক্ত পেপার দেখা, আর্থিক বিনিময়ের মাধ্যমে তালিম দেয়া, কলহ-দ্বন্ধ ও বাজে কথা চর্চা করা ইতেকাফকারীর জন্য মাকরুহ। [রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৮-৪৪৯, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/২১৩]
১৪. রমযান মাসের শেষ দশকের ইতিকাফ অবস্থায় ফরজ গোসল ছাড়া সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয নয়। [মারাকিল ফালাহ ৩৮৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১২]
❐ বৈধ কাজসমূহ-
১৫. মসজিদে আলাদা বিছানা/চৌকি/তাবু স্থাপন করতে পারবেন। [সহিহ ইবনে মাজাহ হাদিস ১৭৭৪; মিশকাত হাদিস ২১০৭; আলবানী/তারাজুয়াইত, ৩২]
✗ তবে সেটা ক্বিবলার বিপরীতে স্থাপন করতে হবে। অর্থাৎ মসজিদের পশ্চাদ দিকে। [সহিহ ইবনে খুজাইমা হাদিস ২২৩৬]
১৬. খাবার এনে দেওয়ার জন্য কেউ না থাকলে নিজে বাড়িতে গিয়ে খাবার নিয়ে আসতে পারবেন, অবশ্য ঘটনাক্রমে খাবার প্রস্ত্তত না হলে সেজন্য অপেক্ষা করতে পারবেন। এমনকি মসজিদে টয়লেট না থাকলে টয়লেট সারতে পারবেন। [ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ১/২১৩; আত তাহমিদ, ৮/৩২৭; শারহুত তাসবির, ৪/১৬৯; আল ম-ফুরু, ৩/১৩৪; আল মুগনী, ৩/৬৮; সহিহ বুখারী হাদিস ২০২৯; সহিহ মুসলিম হাদিস ২৯৭; মিশকাত হাদিস ২১০০; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২২৪]
✗ তবে এসব প্রয়োজনে বের হলে বেশি দ্রুত/তাড়াহুড়ো করার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু আবার একে বারে আস্তে আস্তে কাজ করলেও সেটা জায়েজ হবে না। কাজ শেষ করে চলে আসতে হবে। [আল মুগনী, ৩য় খন্ড/পৃষ্ঠা নং- ৬৯; সূরা বাকারা ১৮৭; সুনানে আবু দাউদ ৩৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১১; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪০]
✗ ইতেকাফকারী কোনো প্রয়োজনে মসজিদের বাইরে গেলে সালাম বা সালামের জবাবের জন্য না থেমে রাস্তায় চলতে চলতে কিংবা প্রয়োজনীয় কাজটি সারতে সারতে সালাম ও সালামের জবাব দিতে পারবে। একই ভাবে কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে অতিক্রম করার সময় তখন হাঁটা অবস্থাতেই ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেওয়া যাবে। তবে কারো সাথে কথা বলা বা কুশলাদি জিজ্ঞাসার জন্য মসজিদের বাইরে অল্প সময়ও দাঁড়ানো জায়েয হবে না। [আবু দাউদ: হাদিস ২৪৭২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৭; মিরকাতুল মাফাতিহ ৪/৫২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১ আহকামে ইতেকাফ: মুফতি তকি উসমানি: ৪০]
১৭. যে কেউ সাক্ষাত করতে আসতে পারবে। স্ত্রী আসলে তাকে কিছুদূর এগিয়ে দিতে যেতে পারবেন।স্ত্রী মসজিদে এসে সাক্ষাত করা জায়েজ। [শারহুন নববী, ৩য় খন্ড/পৃষ্ঠা নং- ২০৮; বুখারী, হাদিস ২০৭৫; সহিহ মুসলিম ২১৭৫]
১৮. ই'তিকাফকারী মোবাইল, ল্যাপটপ, শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই অধ্যয়ন করতে পারবেন। এমনকি বিবাহের কাবিননামা, ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তিও সারতে পারবেন!এছাড়া সুগন্ধি, তেল, মাথা ধোঁয়া ও সৌন্দর্য চর্চা করতে পারবেন। [মিনহাজুল বারী, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা নং- ৪৬৪; হামিয়াতুস সিনদি আলান নাসায়ী,২/৪৫; আউনুল মাবুদ, ৭/১০২; আল ইস্তেযকার, ১/৩৩০; শরহু ইবনুল মুলাক্কিন, ৫/৪৩৮; শরহু ইবনু বাত্তাল আলাল বুখারী, ৪/১৬৫; ফাতাওয়া শামি ৩/৪৪০]
✗ তবে অশ্লিল দৃশ্য দেখা, ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় নষ্ট করা যাবেনা। তখন ই'তিকাফের আসল উদ্দেশ্য গায়েব হয়ে যাবে। [সুরা লুকমান, আয়াত নং: ০৬; সহিহ বুখারী, হাদিস: ৬০৫৭, ১৯০৪, ১৮৯৪, ৫৯২৭, ৭৪৯২, ৭৫৩৮; ইফাবা বুখারী-৫৫১৮; আবি দাউদ, হাদিস: ২৩৬২; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৬৩৮, ১৬৯১, ৩৮২৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৭২৯৫, ৭৪৪৪১, ৭৬৩৬, ৭৭৮১, ৭৯৯৬, ৮১৩৮, ৮৯৭২, ৯৬২৭, ৯৬৩১]
১৯. জুমার সালাত হয়না এমন মসজিদে ই'তিকাফে বসলে জুমার সালাতে যেতে পারবেন। [ফাতওয়ায়ে লাজনায়ে দায়েমা/ফতোয়া নং- ৬৭১৯; ফতোয়ায়ে আলমগিরী, ১/২১৩]
মসজিদের সিড়ি যদি মসজিদের বাহিরে থাকে ও কেউ যদি ইতিকাফে মসজিদের উপরের তালাগুলোতে থাকে তখন জামাত শুরু হলে নিচের তালায় জামায়াতের কাতার পূরন করার জন্য বাহিরের সিড়ি ব্যবহার করে নিচ তালায় আসতে পারবে। [মাবসূত সারাখসী ৩/১১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৫০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪১১; ফাতহুল কাদীর ২/৩০৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫]
২০. কারো জরুরী ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন পড়লে তিনি ডাক্তারের কাছে যেতে পারবেন। কিন্তু এতে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে এটাই হানাফি মাযহাবের মত। অন্য মাযহাবের ফতুয়া অনুযায়ি ইতিকাফ ভাঙ্গবে না। [আল মাজমুউল ফাতওয়া-৬/৫৪৫; জালাসাত রামাদ্বানিয়াহ’ ১৪১১ হিজরির সপ্তম আসর, পৃষ্ঠা-১৪৪; রদ্দুল মুখতার, ২/৪৪৫; ফাতাওয়া কাজী খান ১/২২৩]
তাছাড়া শায়েখ ইবনে উছাইমিন (রহ) "জালাসাতে রামাদ্বানীয়াহ" (রমজানের আসর) ১৪১১ হি. ৭ম আসর, পৃষ্টা নং-১৪৪ এ বলেন- "কোন ই'তিকাফকারীর ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন হলে সে মসজিদ থেকে বের হবে অন্যথায় মসজিদে অবস্থান করবেন।" [জালাসাতে রামাদ্বানীয়াহ/ পৃষ্ঠা নং- ১৪৪]
২১. মসজিদ থেকে শরীরের কিছু অংশ বের করলে ই'তিকাফ ভঙ্গ হবেনা। [শরহুন নববী, ৩/২০৮; আউনুল মাবুদ, ৭/১০২]
মুয়াজ্জিনের আজান দেওয়ার জন্য বাইরে যাওয়া লাগলে, মসজিদ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে অন্য মসজিদে স্থানান্তরিত হতে হলে, এমত অবস্থায় ইতেকাফ ভাঙ্গবে না [রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫, আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩]
❐ ইতিকাফের আবশ্যিক শর্তাবলি-
২২. মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও ই'তিকাফ জায়েজ নেই। নারীদের ঘরে ইতিকাফ করা জায়েজ নেই। এটি কখনোই কোন অবস্থাতেই শুদ্ধ নয়। ইতিকাফ করতে হলে অবশ্যই মসজিদেই করতে হবে। ইতিকাফের স্থান নিয়ে নারী পুরুষের একই মাসআলা। [সুরা বাকারা/আয়াত ১৮৭; সুরা বাকারা, আয়াত ১২৫; সহিহ বুখারি ২০২৬, ২০২৭, ২০৩৭; ইবনু মাজাহ ১৭৭৪; মিশকাত-২১০৭; আহমাদ ২৬০১১; আবু দাউদ/হাদিস নং- ২৪৭৩; মিশকাত/হাদিস নং-২১০৬; দারাকুৎনী/হাদিস ২৩৮৮; ইরওয়াউল গালীল/হাদিস ৯৬৬; আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা ৫/২১২; শরহুন নববী, ৮/৬৮-৭০; আল মুফহিম, ৩/২৮৪; আত তামহীদ, ১/১৯৫; শরহু ইবনু মুলাক্কিন আলাল উমদাহ, ৫/৪২৯; আল মুগনী-৪/৪৬৪; শারহুল উমদা-২/৭১১; আল-ফিকহিয়্যা’ ৫/২১২; আল-মাজমু ৬/৫০৫; ফাতহুল বারী, ৪/২৭৭; আল-মাজমুয়ুল ফাতোয়া ৬/৪৮০; আশ শারহুল মুমতী ৬/৫১৩; ফতোয়ায়ে আব্দুল্লাহ ইবনে বায ১৫/৪৩৭]
অস্থায়ি মসজিদ যা পরবর্তিতে স্থানান্তরিত করা হবে বা কিছু দিনের জন্যই তৈরি করা হয়েছে পরবর্তিতে তা ভেঙ্গে ফেলা হবে কিন্তু সেখানে ৫ ওয়াক্ত সালাত জামায়াতে পড়ানো হয় এমন মসজিদেরও ইতিকাফ করা যাবে না। [সূরা বাকারা আয়াত ১৮৭; তাফসীরে কুরতুবী ২/২২২; কিতাবুল ইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ ৭২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৪২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪০]
উল্লেখ্য, হানাফি মাজহাবে হেদায়া-১/২৩০, ফতোয়া আলমগীরি-১/২১১, উমদাতুল কারী ১১/১৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/১১৩; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৩/১৪৫ তে মহিলারা ঘরে ইতিকাফ করবেন মর্মে যে ফতোয়া রয়েছে। এর পক্ষে দলিল হল -
১. একটি হাদিস আছে যেখানে বলা হয়েছে সারা দুনিয়াই মসজিদ দুই যায়গা ব্যাতিত। [মিশকাত ৭৩৭; আবূ দাঊদ ৪৯২; তিরমিযী ৩১৭; আহকামুল জানায়িয ৮৭ পৃঃ; দারিমী ১৪৩০] ২. নারীদের জন্য জামায়াতের সালাত আদায় করা শর্ত না। ৩. “ জামে বিন আবু শাদ্দাদ রাহ. বলেন, আমি আবু ওয়াইল রা. থেকে শুনেছি তিনি বলেনঃ হুযায়ফা রঃ আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ কে বললেন, কওমের মানুষ আপনার বাড়িতে এবং আবু মুসা আশয়ারী রাঃ এর বাড়িতে ইতিকাফ করছে। আপনি তাদেরকে নিষেধ কেন করছেন না কেন ?? সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ হুযায়ফা রঃ কে বলেন, হয়তো তারা সঠিক কাজই করছে এবং আপনি ভুল করছেন। তারা (হাদিস) আয়ত্ত করে রেখেছে, আর আপনি ভুলে গেছেন! হুযায়ফা রাঃ বলেন, নিশ্চয় ইতিকাফ করতে হবে মাসজিদুল হারাম, মাসজিদুল মদীনা ও মাসজিদুল আকসা’তে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক- হাদিস নং-৮০১৬]
✗ শুধু তাই নয়, ফেতনার দোহায় দিয়ে মহিলাদের মসজিদে ই'তিকাফের যে ফতোয়া প্রদান করা হয়েছে উপরোল্লিখিত কিতাবদ্বয়ে তা অনেকগুলি কিতাবে কোন রদবদল ছাড়াই বিনা যাঁচাইয়ে কপি পেস্ট মারার কারণে উল্টো ভাড়ে মা ভবানী দশা হয়েছে। কেননা, মুহাক্কিকগণ একমত যে, ঐ ফতোয়া স্রেফ খেয়ালিভুল নতুবা মনগড়া [মিনহাতুল বারী, ৪র্থ খন্ড/পৃষ্ঠা ৪৪; আল মুফহীম, ৩/২৪৬; শরহু ইবনে বাত্তাল আলাল বুখারী, ৪/১৪৭]
[এখানে আমার মনে হয় উপমহাদেশে মহিলাদের মসজিদ সংক্রান্ত কোন ধারণা তখনকার (১৭ শতাব্দির মাঝামাঝি) সময়ে না থাকায় অথবা মহিলাদের জন্য মসজিদে নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় ফতোয়ায়ে আলমগিরীর রচয়িতা আলেমবৃন্দ কিয়াসের ভিত্তিতে এক প্রকার দরবারি তাঁবেদারি করতে যেয়ে এরকম ফিতনার দোহায় এনেছেন। কেননা, ফতোয়ায়ে আলমগিরীর অনেক ফতোয়া বিশুদ্ধ দলিল বিরোধী। মনগড়া। আল্লাহু আ'লাম!]
আবার অনেকে বলেছেন নারীদের জন্য বাড়ীর পাশের জুম‘আ মসজিদে ইতিকাফ করা ভাল [ফাতহুল বারী ২০৩৩ নং হাদীছের আলোচনা] যদি কোন নারী এমন কোন মসজিদে ইতিকাফ করেন যেখানে জামাতের সাথে নামায আদায় হয় না তাতে কোন অসুবিধা নেই। কেননা তার উপর জামাতের সাথে নামায আদায় করা ওয়াজিব নয়। [আল-শারহুল মুমতি' ৬/৩১৩; আল-মুগনী]
২৩. জুমা মসজিদ ছাড়া ই'তিকাফ করা যাবেনা মর্মে দলিল রয়েছে এবং বিপক্ষেও দলিল রয়েছে।
✗ জামে মসজিদ ছাড়া হবেনা এরকম মত রয়েছে। [আবু দাউদ হাদিস ২৪৭৩; মিশকাত হাদিস ২১০৬]
✗ তবে এ মতকে উপেক্ষা করে বেশির ভাগ মুহাক্কিকগণ বলেছেন, “জামে মসজিদে ইতেকাফ উত্তম। কারণ জুমার জন্য অন্যত্র যেতে হবে না। কিন্তু জামে মসজিদে ইতেকাফ করা জরুরি নয়। বরং যেসব শরয়ি মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়, সে মসজিদে ইতেকাফ করতে পারে। কেননা রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, এমন প্রতিটি মসজিদে ইতেকাফ শুদ্ধ যে মসজিদে ইমাম ও মুয়াজ্জিন নিযুক্ত আছে।” [দারেকুতনি; ফিকহুস সুন্নাহ; আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা ৫/২১২; দুররে মুখতার: ২/৪৪১; ফাতাওয়ায়ে শামি: ২/১২৯]
স্কলারগণদের মতে যে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতে হয় সে মসজিদে ই'তিকাফ করা যাবে। এমনকি পাঞ্জেগানা বা ওয়াক্তিয়া মসজিদেও করা যাবে। শর্ত ৫ ওয়াক্ত ফরজ সালাত জামায়াতে হতে হবে।” [দারাকুৎনী/হাদিস নং- ২৩৮৮; ইরওয়াউল গালীল/হাদিস নং- ৯৬৬; মাজমু ফাতাওয়া বিন বায ১৫/৪৪৪; আল-মুগনী ৪/৪৬১; আল-শারহুল মুমতি ৬/৩১২]
২৪. ই'তিকাফের জন্য সিয়াম/রোজা রাখা অত্যাবশ্যক। রোজা না থাকলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে। [আবু দাউদ হাদিস ২৪৭৩; মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক হাদিস ৮০৩৭, ৮০৩৩; ফাতহুল বারী, ৪/২৭৬; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/২১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২১; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৪৫; ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩১]
২৫. মহিলাদের স্বামীর অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। এমনকি বিনা অনুমতিতে ই'তিকাফ জায়েজ নেই। [শরহু ইবনুল মুলাক্কিন আলাল উমদাহ, ৫/৪৪০]
স্বামী স্ত্রীকে ইতেকাফের জন্য অনুমতি দেয়ার পর তাকে আর ইতেকাফে বাধা দিতে পারবে না। যদি বাধা দেয় তাহলে সে বাধা মানা স্ত্রীর কর্তব্য নয়। [শামী ৩/৪২৯, আলমগীরি ১/২১১]
২৬. ই‘তিকাফের পদ্ধতি হল, ২০ রামাযান আছরের পর অর্থাৎ ২১শের রাত হতে ইতিকাফ আরাম্ভ হবে [বুখারী হা/২০২৭] অধিকাংশ স্কলারদের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় এক মুহূর্তের জন্যও হতে পারে। এটি ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাব। [আলমাজমু ৬/৪৮৯]
সাধারণত ই'তিকাফে বসার সুন্নাহ হলো ফজর সালাতের পর। [আবি দাউদ, ২/৮৫, হাদিস ২৪৬৪]
আবি দাউদ/পৃ. ৮৫ ও হাদিস নং-২৪৬৪ প্রমাণ করে, ই'তিকাফে বসতে হয় ফজর সালাতের পরে। অথচ ছোটবেলা থেকে এলাকা ও এলাকার বাইরে যত মসজিদ দেখেছি কোন মসজিদের খতীব/ইমাম বা আলেমকে এ কথা বলতে শুনিনি। আর ফতোয়ার কিতাবাদিতেও আসর সালাতের পরে বসা উত্তম বা জরুরী এ জাতীয় কোন কথা দেখিনি। তবে কেন এত এত ভুলের উপরে আমাদের আমল মিশ্রিত? কেউ সঠিকটা বললে কেন মানতে পারিনা। আহ্ হা....!!
লিখাটি সম্পাদিত, সংযোজিত, পরিমার্জিত, পরিবর্ধিত করা হয়েছে।
Comments
Post a Comment